রহমতুল্লা, মুর্শিদাবাদঃ নবম-দশম শ্রেণির পড়ুয়া, স্কুলের মধ্যেই এবার বন্দুক হাতে ঘুরছে। শুধু তাই নয় বন্ধুদের সেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখাচ্ছেও। এমনি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রেজীনগরের আন্দুলবেড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। ঘটনার জেরে এবার স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! কিন্তু এই ছাত্র আগ্নেয়াস্ত্র পেলেন কোথা থেকে? তা নিয়েও চলছে জল্পনা। এ নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের প্রার্থনা হওয়ার পরেই একটি নিচু ক্লাসের ছাত্র এসে তাঁদের কাছে খবর দেয় যে, একটি উঁচু ক্লাসের পড়ুয়া স্কুলের বাথরুমে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সবাইকে দেখিয়ে বেরাচ্ছে। এরপরেই তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, নবম বা দশম শ্রেণির কোনও এক পড়ুয়া আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুলে এসেছে। এরপরেই শিক্ষকরা তৎপর হয়ে নেমে পড়েন তদন্তে। এরপরেই সাত-আটজন শিক্ষকরা মিলে চলে যান নবম ও দশম শ্রেণিতে তল্লাশি চালাতে। তল্লাশি চালিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই আগ্নেয়াস্ত্র। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হতেই তৎক্ষণাৎ স্কুলের পরিচালনা কমিটিকে খবর দেওয়া হয়। এরকম ঘটনা স্কুলের কর্তৃপক্ষ দায় নিতে পারে না তাই তখনই খবর দেওয়া হয় পুলিশপ্রশাসনকে। ঘটনার খবর পেয়েই হাজির হয় রেজিনগর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী।
কিন্তু এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় তাঁদের কোনও গাফিলতির প্রসঙ্গ আসছে না। তবে এহেন ঘটনার পরে স্কুলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত আরও কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে এ বিষয় এখনও স্পষ্ট নয় যে এই আগ্নেয়াস্ত্র দশম শ্রেণির পড়ুয়া পেল কোথা থেকে? কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তার উত্তর দিতে অপারক ছিলেন। তাঁরাও জানেন না যে কোথা থেকে পেল এই আগ্নেয়াস্ত্র?
এই ঘটনায় দুই পড়ুয়ার নাম উঠে এসেছে। সন্তু ঘোষ এবং অনির্বাণ ঘোষ নামের ওই দুই পড়ুয়ার কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। জানা গিয়েছে সন্তু ঘোষের বাবার নাম বাপি ঘোষ এবং অনির্বাণ ঘোষের বাবা গৌতম ঘোষ। স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এনারা মূলত গরু বাছুরের ব্যবসা করেন। কিন্তু খাস খবরের সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এদের মধ্যে একজনের বাবা দুধ ব্যবসায়ী। আর একজনের কাকার সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক যোগ। কাকা আন্দুলবেড়িয়া অঞ্চলের তৃণমূল প্রধান। তৃণমূল প্রধানের ভাইপোর কাছ থেকে উদ্ধার এই আগ্নেয়াস্ত্র কিভাবে এল? তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। তবে বর্তমানে ওই দুই পড়ুয়াকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তৃণমূল প্রধানের ভাইপো এই আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে পেলে তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।