নদিয়া: কথায় বলে, তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে। শেষ বয়সে এসে বয়সে নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখা বৃথা। কিন্তু এইসব কথাকে ভুল প্রমাণিত করে সংসার বাঁধলেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। তাঁদের গল্প রুপোলি পর্দার গল্পকেও হার মানাতে বাধ্য।
আরও পড়ুন: অল্প খরচে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, ছুটি কাটিয়ে আসুন এই ৫ জায়গায়
নদিয়ার চাকদহের লালপুরের বাসিন্দা সুব্রত সেনপগুপ্ত (৭০) রাজ্য পরিবহণ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তাঁর পরিবারে মা, দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রী সন্তানরা রয়েছেন। সুব্রতবাবু অবিবাহিত ছিলেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে ২০১৯ সালে রানাঘাটের পূর্ণনগর জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন। এখানেই তাঁর প্রথমবার দেখা হয় অপর্ণা চক্রবর্তীর (৬৫) সঙ্গে যিনি গত পাঁচ বছর ধরে এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন। অপর্ণাদেবী নিজেও অবিবাহিত ছিলেন এবং বেলেঘাটায় একজন অধ্যাপকের বাড়িতে দীর্ঘদিন পরিচারিকার কাজ করেছেন। শেষ বয়সে নিজের বাড়িতে জায়গা না হওয়ায় বৃদ্ধাশ্রমে এসে থাকা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: যাত্রীবোঝাই বাস নিয়ে ডাম্পারে ধাক্কা, পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১, জখম বহু
কয়েকদিন একই ছাদের তলায় থাকতে থাকতে অপর্ণাদেবীর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন সুব্রত বাবু। শেষপর্যন্ত প্রেম নিবেদন করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন। এই বয়সে এসে বিয়ে, লোকে কি বলবে? এই চিন্তায় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বৃদ্ধা। এরপর ২০২০ সালে বৃদ্ধাশ্রম ছেড়ে ওই এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। জানা গিয়েছে, প্রায় দু সপ্তাহ আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুব্রত সেনগুপ্ত। খবর পেয়ে তাঁর ভাড়া বাড়িতে সেবা করতে যান অপর্ণা চক্রবর্তী। সুব্রতবাবু তাঁকে ফের বিয়ের প্রস্তাব দিলে আর মানা করতে পারেননি। রাজি হয়ে যান অপর্ণাদেবী। বিষয়টি তাঁরা বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধারকে জানায়। অবশেষে আইন মেনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বৃদ্ধাশ্রমের দুই আবাসিক। সুব্রতবাবু খুশি মনে স্ত্রীয়ের যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন এবং জীবনের এতগুলো দিন পেরিয়ে এসে স্বামী হিসেবে একজনকে পাশে পেয়ে খুশি বৃদ্ধা।