নিজস্ব সংবাদদাতা, নিউজলপাইগুড়িঃ আবারও লাইনচ্যুত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। আরও একবার মনে করিয়ে দিল একবছর আগের করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। সোমবার সকালে একটি মালগাড়ি ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৮ এবং আহতের সংখ্যা ৩০-এর বেশি।
সোমবার সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি চলাকালিন ঘটে গেল দুর্ঘটনা। অসমের শিলচর থেকে শিয়ালদহের দিকে আসছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নীচবাড়ি এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে লাল সিগন্যালে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকাকালীন ঘটনাটি ঘটে। হঠাৎই একইলাইনে ঢুকে পড়ে একটি মালগাড়ি এবং পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে ওই এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে। একাধিক বগি মালগাড়ির ওপর উঠে যায়, লাইনচ্যুত হয় মালগাড়িটিও।
রেল সূত্রে খবর, মালগাড়ির চালক, সহকারী চালকসহ ৮ জনের মৃত্যুর ঘটছে। বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যাও। আহতের সংখ্যা ৩০-এর অধিক। ইতিমধ্যেই তাদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী একাধিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রেলের অনুমান, লাল সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির চালক। সেই কারণেই একই লাইনে এসে পড়েছিল মালগাড়িটি। সাধারণত যে লাইনে এক্সপ্রেস চলে সেই লাইনে মালগাড়ি চালানো হয় না। তবে চালকের গাফিলতির কারণে মালগাড়িটি ঢুকে পড়ে এক্সপ্রেস লাইনে এবং সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। মালগাড়িটি ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে। মালগাড়িটির আগে এক্সপ্রেসটিকে পাস করানোর কথা ছিল, তাই মালগাড়িটিকে লাল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন আসছে রেল ইঞ্জিনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা নিয়ে। ইঞ্জিনের সামনে কোন দূরত্বে যদি কোন ট্রেন বা অন্য কিছু থাকে, তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যাবে। একে ‘কবজ’ বলা হয়। মালগাড়িতে কি তবে এই ব্যবস্থা ছিল না? তার জেরেই কি আজ এই দুর্ঘটনা?
হঠাৎই এই দুর্ঘটনা যেন ২০২৩-এর ওড়িশার করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা স্মৃতিতে চলে আসে বঙ্গবাসীর। একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, যদিও এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা ও তদন্তও চলেছিল সেই সময়। তখন উঠে এসেছিল রেলকর্মীর গাফিলতি এবং সিগন্যাল বিভ্রাটের কথাও। ঠিক একবছর পর পুনরাবৃত্তি ঘটল একই দৃশ্যের। এবার ও কী একই গাফিলতির কারনেই এই দুর্ঘটনা? খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা।