তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতির পরই তড়িঘড়ি ক্র্যাশার মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসলো বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। দ্বিপাক্ষিক এই আলোচনায় তাঁদের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্র্যাশার মালিকেরা৷
আরও পড়ুন: দক্ষ শিকারি , সাতাঁরে নাম-ডাক, তবুও এ যাত্রায় ব্যর্থ বাঘ মামা
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ শালতোড়া সহ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অংশের ক্র্যাশার শিল্প৷ ফলে চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ শ্রমিক ও তাদের পরিবার। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দলের ‘নবজোয়ার’র যাত্রায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ায় এলে শালতোড়ার ক্র্যাশার শিল্পের শ্রমিকরা তাদের দুরাবস্থার কথা তাঁকে জানান। সমস্যা সমাধানে অভিষেক ৪০ দিনে’র সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন৷ বাঁকুড়া জেলা পাথর শিল্প কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রিয়দর্শী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি নীতির জন্যই সমস্যা হচ্ছে। এখন যে নিয়ম চালু করা হয়েছে তা এক দিকে সময়সাপেক্ষ আবার অন্যদিকে খরচ সাপেক্ষ। ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে শুরু করা ক্র্যাশার ইউনিট বন্ধ, উৎপাদিত পাথরও বিক্রি করা যাচ্ছে না৷’’
আরও পড়ুন: প্রথম দশে নেই কলকাতা, ফেল করল ১ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী! উঠে আসছে অযোগ্য শিক্ষকদের প্রসঙ্গ
এই ইস্যুতে শাসক দলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিআইএম বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য যদুনাথ রায় বলেন, ২০২১ সালের আগে থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই জেলার দায়িত্বে। ওনার কাজই ছিল এখানকার কয়লা, বালি আর পাথর থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করা। সেই সময় জেলার পাথর খাদান মালিকদের সঙ্গে ‘সেটিং’ হয়নি, তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পাশের জেলা পুরুলিয়া, হুগলিতে ক্র্যাশার শিল্প চালু ছিল৷ এখন মনে হয় ‘সেটিং’ হয়ে গেছে, তাই তড়িঘড়ি ফের চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘‘নাটকের রিহার্সাল চলছে। রাজ্য সরকার বন্ধ করেছিল, আর যুবরাজ তো শাসক দলের সাংসদ। আর এখন নাটক না করে ক্র্যাশার শিল্প চালু হোক, এতে সরকারেরই রাজস্ব বাড়বে৷’’ জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার বলেন, আবেদনকারী ক্র্যাশার মালিকদের স্বীকৃত এজেন্সির মাধ্যমে প্ল্যান বানাতে হবে। সেই বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, দু’বছর ধরে দাবি জানিয়েও যে সমস্যার সমাধান হল না, অভিষেকের এক কথাতেই তা কি ভাবে সম্ভব? অভিষেক রাজ্য প্রশাসনের কোন পদে রয়েছেন, যে তিনি ইশারা করতেই প্রশাসন তৎপর? তবে কি প্রশাসনও তৃণমূলের ‘বি টিম’? প্রশ্ন তুলছেন জেলার নিন্দুকেরা৷
আরও পড়ুন: ফের নোট বাতিল! আবার কি কালো দিন ফিরছে? কি বললো আরবিআই