পুলক বেরা, তমলুকঃ চলছে পঠন-পাঠন। মনোযোগ নেই কয়েকজন পড়ুয়াদের। গল্পে ব্যস্ত তারা। শিক্ষকের কাছে নালিশ জানানো হয়। নালিশ করা নিয়ে শিক্ষকের অবর্তমানে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে দুই নবম শ্রেণির ছাত্ররা। বচসা চলাকালীন আচমকাই সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে এক ছাত্রকে আঘাত করল তারই সহপাঠী। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলার তমলুকের চাঠরা কুঞ্জরাণী বাণীভবন স্কুলে।
দুই ছাত্রের নাম দেবব্রত দন্ডপাট ও সেখ সোয়েল। অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, স্কুল ব্যাগে করে সার্জিক্যাল ব্লেডের মতো এক ধারালো অস্ত্র নিয়ে স্কুলে আসে সেখ সোয়েল। দুই ছাত্রের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়। আচমকাই গণ্ডগোলের মধ্যে সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে সেখ সোয়েল। এমটাই অভিযোগ। দেবব্রত দন্ডপাট কোনোরকমে নিজেকে সরিয়ে নেয়। চোয়ালে আঘাত লাগে তার। প্রাণে বেঁচে যায় ওই ছাত্র। গুরুতর আহত হয়ে পড়ে দেবব্রত। তৎক্ষনাৎ অন্যান্য পড়ুয়ারা প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যায় আহত ছাত্রকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আহত ছাত্রকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক।
ঘটনায় ভীত স্কুল পড়ুয়াসহ অভিভাবকেরাও। স্কুলের মধ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে কি ভাবে এল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আহত পড়ুয়ার কথায়, “আগেও একদিন সেখ সোয়েল সার্জিক্যাল ব্লেড নিয়ে বিদ্যালয়ে এসেছিল। অন্য এক পড়ুয়ার জামাও কেটে দিয়েছিল।” ঘটনার জেরে স্কুলের সামনে রীতিমতো বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্কুলের অভিভাবকেরা। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ? প্রশ্ন তুলছে অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে তমলুক ( Tamluk) থানার পুলিশ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,অভিযুক্ত ওই ছাত্রকে টি.সি. দেওয়া হয়েছে। তবে টি.সি. দিলে কী শুধরে যাবে ওই ছাত্র? পরবর্তীকালে যদি আবারও একই ঘটনা ঘটায়। প্রশ্ন তুলছে অভিভাবকেরা। এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
কয়েকদিন আগেও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করেছিল অন্য এক স্কুল্র ছাত্র। তবে কী স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও অপরাধ প্রবণতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এর নেপথ্যে কারণ কী? সোশ্যাল মিডিয়াই কী তবে বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা। এরকম নানা প্রশ্ন ঘুরছে অভিভাবকদের মনে।