সাদ্দাম হোসেন, চাঁচলঃ গৃহবধুর উপর পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। সাত বছরের বিবাহিত জীবনে প্রথম থেকেই চলতে অত্যাচার। প্রায় প্রত্যেকদিন রাতেই শারীরিক সম্পর্কের জন্য সম্মতি না দিলে কপালে জুটতো মার(Physical violence)। সম্প্রতি স্বামী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বেড়ে যায় অত্যাচারের মাত্রা।লোহার রড দিয়ে মারের জেরে ভাঙল গৃহবধুর বুকের পাঁজর। চাঁচল ১ নং ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বামুয়া গ্রামের ঘটনা। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত গৃহবধুর নাম সুনিতা দাস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাত বছর আগে বগচড়া গ্রামের সুনিতার বিয়ে হয় বামুয়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর দাসের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই লাগাতার অশান্তি (Physical violence) চলত সংসারে। আক্রান্ত গৃহবধুর অভিযোগ, প্রায়ই তার স্বামী তাকে মারধর করত। প্রত্যেক রাতেই ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্কের জন্য জোর করতে। তাতে রাজি না হলে অত্যাচার চালাত স্বামী। তিনি বাবার বাড়ির লোকেদের জানালে আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় সকলে মানিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিত। সহ্য করেও মুখ বুঁজে থাকতেন সুনিতা। দুই সন্তানও রয়েছে তাদের। কিন্তু সম্প্রতি বেড়ে যায় আরও অত্যাচারের মাত্রা। নেপথ্যে স্বামী শুভঙ্করের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক।গত মঙ্গলবার দুপুরে রান্না না হওয়া নিয়ে শুভঙ্কর সুনিতার উপর অত্যাচার শুরু করে। উঠোনে ফেলে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারা হয়। শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর ক্ষত রয়েছে আক্রান্ত গৃহবধূর। এমনকি ভেঙে গিয়েছে বুকের পাঁজর। বাবার বাড়ির লোকেরা এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় সুনিতাকে।
চাঁচল থানায় সমগ্র ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ( Physical violence) দায়ের করা হয়েছে।যদিও অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। অসুস্থ সুনিতার চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তার বাড়ির লোকেরা। প্রত্যেকে শুভঙ্করের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে। সুনিতা দাস জানান,” বহু বছর ধরে অত্যাচার চলে আমার উপর। প্রত্যেকে বলত মেনে নিয়ে থেকে যেতে। তাই থেকে যেতাম। কিন্তু এবার যেভাবে মারা হয়েছে জানিনা কবে সুস্থ হতে পারব। আমি আর ওই বাড়িতে যাব না। আমার স্বামীর শাস্তি হোক এটাই চাইব।”
সুনিতার বাবা ফুলকুমার বসাকের অভিযোগ,” আমার মেয়েকে মারধরের( Physical violence) পর ফোন করে বলে যে আমার মেয়ে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে গিয়েছে। আমরা গিয়ে বুঝতে পারি সবটা জামাইয়ের কীর্তি। আমার তো আর্থিক অবস্থা তেমন নেই। তাই সেই অবস্থাতেও বলেছিলাম মেয়ের চিকিৎসাটা করুক এবং নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিক। জামাই তাতেও রাজি না। এবার আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। মেয়েটা যাতে সুবিচার পায়।”
সুনিতার প্রতিবেশী শেখ জাহিরু বলেন,” যেভাবে মেরেছে চোখে দেখার মতো না। সত্যি খুব অত্যাচার হত মেয়েটার উপর। ওর বাবার বাড়ির লোকেরা ঠিক করে চিকিৎসাও করতে পারছে না। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিক।”