হাসানুজ্জামান, বসিরহাট: শর্ত ছিল লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারী হতে৷ তারপরেই হবে বিয়ে৷ সেই মতো বিয়েও হয়৷ কিন্তু বিয়ের দুবছর পর থেকে শুরু হয় সংসারে অশান্তি৷ শারীরিকভাবে নির্যাতিত হতে হয় রূপান্তরিত ওই নারীকে৷ বাধ্য হয়ে তিনি দ্বারস্থ হয় থানায়৷ ঘটনার তদন্তে পুলিশ৷
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া থানার অন্তর্গত শালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালপোতা গ্রামের ঘটনা। স্বরুপনগর গ্রামের বাসিন্দা ২১ বছরের রুপা খাতুন৷ তিনি জন্ম থেকেই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ছিলেন৷ পরবর্তীতে হাড়োয়া থানার অন্তর্গত গোয়ালপোতা গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৪-এর রবিউল মোল্লার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তারপর রবিউল মোল্লা তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন৷ কিন্তু শর্ত ছিল লিঙ্গ পরিবর্তন করতে হবে। সেই মতো সুখে শান্তিতে সংসার করার আশায় তৃতীয় লিঙ্গের রুপা খাতুন লিঙ্গ পরিবর্তন করে রূপান্তরিত নারী হিসেবে রূপায়িত হয়। তারপর শর্ত মতো রবিউল ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দুই বছর আগে।
রূপান্তরিত নারীর রূপা খাতুন জানান, সুখে শান্তিতে সংসার করার আশায় বিয়ের সময় প্রায় তিন লক্ষ টাকা নগদ এবং সোনা গহনা মিলিয়ে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা তাঁর কাছ থেকে নিয়েছে তাঁর স্বামী রবিউল মোল্লা। তারপর বিয়ের ছয় মাস পর থেকে শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা অত্যাচার মারধর সহ একাধিক নির্যাতন করে রুপা খাতুনকে।
এমনকি তাঁর স্বামী রবিউল মোল্লাকে ভুল বুঝিয়ে ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে দেন রুপা খাতুনের শাশুড়ি। তারপর ওই রূপান্তরিত বধূকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় শাশুড়ি৷ শুক্রবার দুপুরে রুপা সংসার করার আশায় শ্বশুর বাড়িতে গেলেই তাঁকে ফের মারধর করে তাড়িয়ে দেয় তার শাশুড়ি ভাসুরসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এমনটাই অভিযোগ রুপার৷
ঘটনায় আহত রুপা খাতুনকে চিকিৎসা করানো হয় হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। ইতিমধ্যে বিচার পাওয়ার আশায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রূপান্তরিত নারী রুপা খাতুন। অভিযোগের ভিত্তিতে হাড়োয়া থানার পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।