তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: নববর্ষের প্রথম মাস বৈশাখে অক্ষয় তৃতীয়া আর হাল খাতা যেন সমার্থক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবই যেন ফিকে হতে শুরু করেছে। দোকানে দোকানে গণেশের পুজো, হাল খাতার মিষ্টির প্যাকেট সঙ্গে বাংলা ক্যালেণ্ডার- এখন সেসব অতীত। হালখাতা নিয়ে আর তেমন উন্মাদনা দেখা যায় না ব্যবসায়ী থেকে খদ্দের সাধারণ কারওমধ্যেই।
অথচ একটা সময় ছিল, হালখাতাও বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের তালিকায় ঢুকে পড়েছিল। ছাপা হতো বাহারি কার্ড। ব্যবসায়ীদের জন্য মাটির সরাতে কলাগাছের পাতা, ডাব এবং উপরে গণেশের ছবি থাকতো। কিন্তু এখন আর হালখাতার কার্ড সেহারে ছাপা হয় না। বাংলা বছরের প্রথম দিনে এই উৎসবও আর তেমন খুব একটা জাঁকজমকভাবে পালন হয় না। দোকানে দোকানে পূজোর ঝক্কিও নিতে চাইছেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ, তাতে খরচ অনেক! তাই সেসব বাদ দিয়ে এখন স্রেফ কোনও মন্দিরে লাল কাপড়ে মোড়া নতুন খাতা নিয়ে গিয়ে পুজো দিয়েই ‘কাজ’ সেরে ফেলছেন সিংহভাগ ব্যবসায়ী৷ আর এসবের কারণেই অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলা নববর্ষ আর অক্ষয় তৃতীয়ার সেই উৎসব।
বাঁকুড়া শহরের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার গৌতম বেজ বলেন, ‘‘ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বেড়েছে৷ বিক্রি বাটা কমেছে। তার ওপর এখন অনলাইনের যুগ৷ দোকানে এসে দাঁড়িয়ে জিনিস কেনার মতো সময় কই মানুষের হাতে! ফলে দোকানে হালখাতার পুজো অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ, ঝক্কিরও৷ তাই ওই সব এখন আর কেউই চান না৷ অধিকাংশই নমঃ নমঃ করে মন্দিরে গিয়ে হালখাতার পুজো দিয়ে দায়িত্ব সেরে ফেলেন৷’’ প্রায় একই কথা শোনালেন রাজু চন্দ, তৃপ্তি দত্তরা। তাঁরা বলেন, হাল খাতা পুজোর সেই জৌলুষ আর নেই৷ এখন পুরোটাই নিয়মরক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পিছনে মানুষের ‘ব্যস্ততা’ই দায়ী বলে তাঁরা মনে করেন৷
আরও পড়ুন: ক্যারাটেতে ব্রাউন বেল্ট, স্নাতক পাশ রাজদীপ এখন ‘মিস্টার ফুচকাওয়ালা’