সুজয় গুহ: হঠাৎ অশরীরী প্রত্যাবর্তন!! ঠিক যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে, সরকার যখন পঞ্চায়েত রাজ নিজের হাতে রাখতে আস্তিনের প্রত্যেকটি তাস ছড়িয়ে দিয়েছে, ঠিক তখনই তিনি আবির্ভূত হলেন নেতার বেশেই। কে তিনি? তিনি একদা বীরভূমের একচ্ছত্র দুর্দণ্ডপ্রতাপ দাপুটে ত্রাস নেতা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। নিন্দুকেরা বলছেন এ যেন খেতের ফসল কাকেদের কবল থেকে বাঁচাতে কাকতাড়ুয়ার উপস্থিতি। অনুব্রত এবং কাকতাড়ুয়া এখন বীরভূমে সমার্থক শব্দ। তার শরীরী দেহ তিহার জেলে থাকলেও মন নাকি পড়ে রয়েছে বীরভূমের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট করানোর দিকে।
আরও পড়ুন: আমি দাদা কিছুই পারি না
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসা নিয়ে নির্বাচন কমিশন, রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যপালের মধ্যে দ্বন্দ্বের আঁচ স্তিমিত না হলেও ভোট প্রচারে বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রতর উপস্থিতি নিয়ে একপ্রকার নিশ্চয়তা জেলা কর্মীদের মুখে। গরুপাচার মামলায় দলের ভাবমূর্তি যেভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে সেই সিউড়িতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিততে হলে অনুব্রত ছাড়া এখন গতি নেই।
বীরভূম থেকে তিহার জেলের দূরত্ব প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার হলেও এক লহমায় সেই দূরত্ব কমিয়ে এনেছেন জেলার দলের অনুব্রত অনুগামীরা। সিউড়িতে তৃণমূলের কার্যালয়ের সামনে ব্যানারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পাশে স্থান পেয়েছে নকুল দানা, গুর বাতাসা নেতা ও ত্রাস সম্রাট অনুব্রতর ছবি। শুধু মমতাই নয় অভিষেকের পাশেও স্থান পেয়েছেন তিনি। অনুব্রতর এহেন অশরীরী উপস্থিতি দেখে জেলার নেতারা বলেছেন, “অনুব্রত দলের জেলা সভাপতি। তিনি প্রাসঙ্গিক ছিলেন আছেন থাকবেন। ভোট প্রচারে তার ছবি মানে ভোট করাতে একপ্রকার তিনিই আছেন।”
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
জেলা জুড়ে ভোট করাতে হলে অনুব্রত গাড়ি একসময় চষে বেড়াত গ্রামের অলিগলি। নজরবন্দী থাকা অবস্থাতেও পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে তিনি ভোট করিয়েছেন সাফল্যের সঙ্গে। গত এক বছর অনুব্রতহীন বীরভূম দলের সাফল্য বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। আর তাই অশরীরী অনুব্রতর ত্রাসকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে, জোর কদমে। শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, হার্টে ৭৫ শতাংশ ব্লকেজ, লিভার খারাপ এমনকী দু’বেলা ইনসুলিন নিতে হচ্ছে তিহার জেলে বিচারাধীনবন্দি অনুব্রতকে। তবুও বীরভূমের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশরীরী অনুব্রত মানুষের মনে সেই আগের মতই ভীতি সঞ্চার করবে বলে ধারণা দলীয় নেতাকর্মীদের।