কলকাতা: ফের বিদ্রোহের ছায়া শাসকদলে? সৌজন্যে ২১ জুলাইকে কেন্দ্র করে এআইটিসির টুইটার হ্যান্ডেলের কভার পেজের ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে ঘিরে কভারপেজে শুধুই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। নেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ছবি। গত বছরের ২৩ নভেম্বরে নেতাজি ইন্ডোরে কর্মী সভাতেও অভিষেকের কোনও ছবি ছিল না। যা নিয়ে ওই সময় প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রশ্ন উঠেছিল, দলনেত্রী এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সম্পর্কের বিশ্বাসেও কি চোরাস্রোত? নেত্রীকে ছাপিয়ে যেতে চাইছেন অভিষেক? তাই কি সাময়িক ডানা ছেঁটে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা?
আরও পড়ুনঃ হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদ বিশ বাঁও জলে, অনিল বিশ্বাস থাকলে এমনটা হত কি
ফের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে ঘিরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় বিষয়টিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল তৈরি হয়েছে দলের অন্দরেও। তাঁদের মতে, সাম্প্রতিক অতীতে দলের প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতে মমতার পাশাপাশি অভিষেকের ছবি দেখা যাচ্ছে। দিদির পরে তিনিই যে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তাও বিভিন্ন সময় আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে থাকেন অভিষেক। এবারের ভোটে দিদির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রচারে ঝড়ও তুলেছিলেন অভিষেক। ফলে দলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটে ভাল ফলের পর ২১ জুলাই হতে চলা সমাবেশে অভিষেকের ছবি রাখা যেতেই পারতো। অন্তত দলের সেনাপতি হিসেবে এই চাওয়ার সঙ্গত কারণও রয়েছে অভিষেকের। কিন্তু তা না হওয়ায় দলের অন্দরে পিসি-ভাইপোর দ্বন্দ্ব নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নতুন নয়। এবারের লোকসভা ভোটেও সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সত্তরোর্দ্ধদের প্রার্থী না করার জন্য দলনেত্রীর উপরে চাপ তৈরি করেছিলেন অভিষেক। এমনকী এ বিষয়ে জলঘোলা করতে প্রকাশ্যেও অভিষেক প্রশ্ন তুলেছিলেন, “একজন ৪০ বছরের মানুষ আর একজন ৭০ বছরের মানুষের কর্মক্ষমতা কি এক?” সব পেশার মতো রাজনীতিতেও অবসর থাকা উচিত বলেও জানিয়েছিলেন অভিষেক। পাল্টা হিসেবে সৌগতও সেসময় বলেছিলেন, “আমরা কলকারখানার শ্রমিক নই যে শারীরিক কসরত দিয়ে দক্ষতা বিচার করতে হবে।” তবে নবীন-প্রবীণ ওই বিতর্কে শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছিল দলনেত্রীর সিদ্ধান্তের। লোকসভায় ফের টিকিট পেয়েছিলেন সৌগত, সুদীপরা। যদিও সুদীপ, সৌগতর প্রচারে সেভাবে দেখা যায়নি অভিষেককে। দলের একটি সূত্রের খবর, ওই সময় চোখের চিকিৎসার জন্য অভিষেক বিদেশে যাবেন।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিংকঃ https://www.facebook.com/share/434buqMrZ98y4kma/?mibextid=qi2Omg
সম্প্রতি টুইটে সাময়িক বিরতির কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। সম্ভবত, সে কারণেই ছবি রাখা হয়নি। অপর অংশের মতে, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই সংগঠন এবং প্রশাসনকে চাঙ্গা করতে নেত্রী যেভাবে ঝাঁকুনি দিতে শুরু করেছেন তাতে অভিষেকপন্থীরা ফের নবীন-প্রবীণ বিতর্ক সামনে আনতে পারেন। প্রশ্ন তুলতে পারেন, বাকি সব ক্ষেত্রের মতো বয়সের সীমার ক্ষেত্রেও কেন শুদ্ধিকরণ করা হবে না? সম্ভবত, সেই বিদ্রোহের আঁচ আগুনে পরিণত হওয়ার আগেই সাময়িক ডানা ছাঁটা হল কিনা, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে।