বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: শনিবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে অম্বুবাচী (Ambubachi)। এই সময় কেবলমাত্র রথযাত্রা বা জগন্নাথদেবের কোনও আচার ব্যতীত যেকোনও প্রকার মাঙ্গলিক কার্য বা বিশেষ পুজো বন্ধ থাকবে। বেদে পৃথিবীকে ‘ধরিত্রী মাতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই একজন নারী যেমন রজঃস্বলা হলে তবেই সন্তান ধারণে সক্ষম হন। তেমনই এই পৃথিবীও ঋতুমতী হন। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে অবস্থান করেন, পরবর্তী সে বারের সে সময়েই পৃথিবী ঋতুমতী হন। আষাঢ় মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ হচ্ছে সেই সময়কাল।
আরও পড়ুনঃ পুরোহিতের তিরস্কারে পাতালে প্রবেশ করতে থাকেন দেবীমূর্তি, তারপর কী হল মাকড়চণ্ডী মন্দিরে
সারা দেশের প্রতিটি শক্তিপীঠেই অম্বুবাচী (Ambubachi) পালন করা হয়। তবে কামরূপ কামাখ্যার গুরুত্ব বাকি সবার থেকে আলাদা। কারণ, অম্বুবাচীর সময়ে কামাখ্যা মন্দিরের শিলারূপী মাতৃযোনী থেকে থেকে নির্গত হতে থাকে এক অদ্ভুত লাল রঙের তরল। যা দেবীর রজঃস্রাব বলে ধারণা করা হয়। এদিকে ঋতুমতী পৃথিবীকে অশুচি মনে করা হয়। ফলে অম্বুবাচীকালে (Ambubachi) কামরূপ কামাখ্যাসহ যেকোনও শক্তিপীঠে দেবীদর্শন ঘোরতর নিষিদ্ধ।
অম্বুবাচীর (Ambubachi) প্রথম তিনদিন কামাখ্যা মন্দিরে গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ রাখা হয়। ‘কালিকা পুরাণে’ স্পষ্টতই বলা হয়েছে যে কামরূপের নীলাচল পাহাড়ে দেবী সতী তাঁর ভৈরবের সঙ্গে নিত্য বিহার করেন। কারণ, দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর এখানেই তাঁর যোনী পতিত হয়েছিল। সে কারণেই এই সময় মাতৃযোনী থেকে নির্গত লাল তরলকে দেবীর রজঃস্রাব বলে মনে করা হয়।
খাস খবর অ্যাপের লিঙ্ক: https://play.google.com/store/apps/details?id=app.aartsspl.khaskhobor
কিন্তু প্রশ্ন তো এখানেই। সত্যিই কি রজঃস্রাব হয় মা কামাখ্যার? বিজ্ঞান কী বলে? বিজ্ঞানের ব্যখ্যা কিন্তু একেবারেই স্পষ্ট। অম্বুবাচী হয় যখন সে সময়টা বর্ষাকাল। আর বর্ষাকালে ভূগর্ভস্থ জলে লৌহের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। আর এর ফলেই জলের রং লাল হয়। কিন্তু তাই যদি হয়, তবে সারা বর্ষাকাল জুড়েই কামাখ্যার শিলারূপী মাতৃযোনী থেকে লাল রংয়ের তরল নির্গত হওয়ার কথা। শুধু অম্বুবাচীর (Ambubachi) সময়টুকুতেই নির্গত হয় কেন? একবিংশ শতাব্দীতেও এই রহস্যের কোনও কিনারা করতে পারেনি বৈজ্ঞানিক মহল।