30 C
Kolkata
Monday, July 1, 2024
Home জাতীয় খবর লক্ষ লক্ষ শূন্যপদে দুর্ঘটনা তো স্বাভাবিক

লক্ষ লক্ষ শূন্যপদে দুর্ঘটনা তো স্বাভাবিক

ভারতীয় জনজীবনের অঙ্গ ভারতীয় রেল। বলা যেতে পারে ভারতের লাইফ লাইন ভারতীয় রেল। আর লাইফ লাইন যদি থমকে যায় তাহলে জনজীবনও স্তব্ধ হয়ে যায়। ৭০ বছরের ভারতীয় রেলের ইতিহাসে চাঁদের কলঙ্কের মত তাড়া করে বেড়াচ্ছে একের পর এক বড় দুর্ঘটনা। দিন যায় বছর যায় সরকারের বদল হয়। শুধু বদল হয় না দুর্ঘটনার ছবিটার। কিন্তু নেপথ্যের নায়ক কে? কে বা কারা দায়ী এই রেল দুর্ঘটনার পিছনে ? খাসখবরের অন্তর্তদন্তে আজ তৃতীয় কিস্তি লিখলেন

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি।

ভারতীয় জন জীবনের অঙ্গ ভারতীয় রেল। শুধু যে দেশের সিংহভাগ মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য রেলে নিত্য যাতায়াত করেন তাই নয়, দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র-ই হল এই রেল। যেখানে যুক্ত রয়েছেন প্রায় কয়েক লক্ষ কর্মী। কিন্তু গত কয়েক বছরে যেভাবে একের পর এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে খুব স্বাভাবিকভাবেই আঙুল উঠছে রেল পরিষেবার দিকে। লক্ষাধিক কর্মী যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত তাদের পরিষেবা এত নিম্নমানের কেন হবে? কেন এক বছরের ব্যবধানে করোমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মত দু-দুটো মারত্মক রেল দুর্ঘটনা ঘটবে? আসলে বাইরে থেকে দেখে যতই সুখী পরিবার বলে মনে হোক না কেন, ভারতীয় রেলের অন্দরের চিত্রটা একেবারেই আলাদা। প্রায় কয়েক লক্ষ কর্মী ভারতীয় রেলের সঙ্গে যুক্ত এটা যেমন সত্যি, একইভাবে এটাও সর্বৈব সত্যি যে প্রায় কয়েক লক্ষ শূন্যপদ (vacant posts) পড়ে রয়েছে ভারতীয় রেলে।

- Advertisement -

আরও পড়ুনঃ ভারতীয় রেলে ভাঁড়ে মা ভবানী দশা

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ‘কবচ ব্যবস্থা’ সর্বত্র উপলব্ধ না থাকা এবং পৃথক রেল বাজেট তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এই লক্ষাধিক শূন্যপদ-ও (vacant posts) এই ধরণের রেল দুর্ঘটনার নেপথ্যে অন্যতম বড় একটি কারণ। রেল জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল সঠিকভাবে কাজ না করার জন্যই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আর এখানেই বারংবার উঠে আসছে শূন্যপদ (vacant posts) সংক্রান্ত প্রশ্নটা। বিশেষ করে, নিরাপত্তা বিভাগে। যার সঙ্গে যাত্রী সুরক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

- Advertisement -

রেলের কোন বিভাগে কত শূন্যপদ?

এইমুহূর্তে রেলে শূন্যপদের (vacant posts) সংখ্যা ঠিক কত তা সঠিকভাবে বলা দুষ্কর। তবে মধ্যপ্রদেশের চন্দ্রশেখর গৌরের করা আরটিআই-এর ভিত্তিতে যেটুকু তথ্য সামনে আসছে তা হল, এই মুহূর্তে সুরক্ষা বিভাগে ১০ লক্ষ অনুমোদিত পদের মধ্যে শূন্য পদ দেড়লক্ষেরও বেশি। এর মধ্যে সহকারী চালকের পদের সংখ্যা ৪,৩৩৭। এছাড়া ২০২৩ সালের গোড়ার দিকে যে তথ্য সামনে এসেছিল তা থেকে জানা গিয়েছিল যে সেই সময় রেলের গ্রুপ-সি’তে প্রায় ১৫ লক্ষ পদের মধ্যে শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৪৩৮টি। এর মধ্যে রয়েছে পয়েন্টম্যান, ট্র্যাকপার্সন, সিগন্যাল এবং টেলিফোন অপারেটর এবং বিদ্যুৎকর্মীর পদ। অর্থাৎ যাত্রী সুরক্ষার সঙ্গে যারা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এছাড়া একাধিক আধিকারিকের পদ-ও শূন্য বলে জানা গিয়েছিল। জনৈক সাংবাদিকের আরটিআই-এর জবাবে রেল জানাতে বাধ্য হয়েছিল যে, ১৯ হাজার গেজেটেড আধিকারিকের পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৩ হাজারেরও বেশি পদ। অর্থাৎ সব বিভাগেই হাল তথৈবচ। তবু গ্রুপ-সি -এর এহেন ধূ ধূ গড়ের মাঠ দশা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ যাত্রী সুরক্ষা’র মত বিষয় এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কত শূন্যপদে নিয়োগ?

- Advertisement -

একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা বিভাগে শূন্যপদ (vacant posts) পূরণের ট্রেড ইউনিয়নগুলি চাপ দিতে শুরু করেছে রেল মন্ত্রককে। এই চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে কার্যত বাধ্য হয়েছে রেল। মঙ্গলবার অর্থাৎ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরদিন-ই রেল ১৮৭৯৯টি পদের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সেইসঙ্গে রেল আরও জানিয়েছে, জানুয়ারিতে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপিত শূন্যপদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫,৬৯৬টি। এবারে সেটি বাড়িয়ে ১৮৭৯৯ করা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি রেলের আরও একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সামনে এসেছে। সেখানে মোট ৭৯১১টি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের শূন্যপদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতকিছুর পরেও এসব নিতান্তই গা বাঁচাতে গালভরা প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই মনে হওয়ার উপায় নেই। কারণ যে পরিমাণ শূন্যপদের তথ্য সামনে আসছে, সেই তুলনায় নিয়োগের সংখ্যা পর্বতের কাছে মূষিকতুল্য।

‘কবচ সুরক্ষা’ দেশের সব রেলপথে উপলব্ধ না হওয়ার তবু হয়ত একটি সম্মত কারণ পাওয়া যাবে খুঁজলে। কিন্তু না বলে উপায় নেই যে রেলে এত শূন্যপদের (vacant posts) নেপথ্যে অন্যতম কারণ নিঃসন্দেহে ৯২ বছরের প্রথা ভেঙ্গে রেল বাজেট তুলে দেওয়া। বিরোধীরা যে কথা বারবার বলে আসছেন, রেলের মত এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্রকে একটু বিশেষ নজরে দেখা উচিত। বিশেষ নজর বলতে অবশ্যই রেল পরিষেবা এবং যাত্রী সুরক্ষার মত বিষয়গুলি। কিন্তু পরিষেবা রেল দেবে কী করে যদি লোক-ই না থাকে? অথচ এ বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র টনক নেই। সুতরাং, ভুগে মরতে হবে জনসাধারণকেই।

কাল চতুর্থ কিস্তি। নজর রাখুন।

- Advertisement -

সপ্তাহের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদ

গৃহবধূর সঙ্গে সঙ্গম, হাতেনাতে ধরে বেধড়ক মার অর্ধনগ্ন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে

রফিকুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ: গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত এক সিভিক ভলেন্টিয়ার৷ রাতে বাড়িতে স্বামী না থাকার সুযোগ নিয়ে প্রেমিক সিভিক ভলেন্টিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করান...

র‍্যাম্পে হেঁটে নজির গড়লেন তৃতীয় লিঙ্গের ফ্যাশন প্রতিযোগীরা

শঙ্কু কর্মকার, বালুরঘাটঃ সামাজিক স্তরে নানান যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে নিজেদের স্থান তৈরির লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তৃতীয় লিঙ্গ(Transgender)। শিক্ষা থেকে সাহিত্য সর্বস্তরেই এখন তৃতীয় লিঙ্গরা...

Exclusive: “এখনই কিছু বলার নেই, জেনারেল মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে”, সত্যজিতের মন্তব্যে জল্পনার সৃষ্টি

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: সৃঞ্জয় সরলেন। এলেন কে‌? মোহনবাগান সচিব পদে সত্যজিৎ চ্যাটার্জি এবং ডিরেক্টরের ভূমিকায় সৃঞ্জয় বসুরই ভাই সৌমিক বসু। সত্যজিৎ ছিলেন সহ সচিব। কার্যকরী...

মানিকতলায় পুরানো মুখেই আস্থা, উপনির্বাচনে চার কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা বিজেপির

কলকাতা: উপনির্বাচনেও(Assembly By Election ) একের পর এক চমক। বাংলার চার কেন্দ্রে হবে উপনির্বাচন। আগেই  তৃণমূল চার কেন্দ্রে  প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। বামেরাও...

খবর এই মুহূর্তে

কেদারনাথ মন্দিরের পিছন দিক থেকে হঠাৎ নামল ভয়ঙ্কর তুষারঝড়, তারপর যা হল…

সিমলা: হটাৎ করেই কেদারনাথ মন্দিরের পিছনে দেখা গেল পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গতিতে নামছে সাদা মেঘের মত কিছু জিনিস। কয়েক মুহূর্ত পর বোঝা গেল...

সমাজবাদী পার্টির এই সংসদকে লোকসভার ডেপুটি স্পিকার করার পরামর্শ তৃণমূলের

নয়াদিল্লি: লোকসভার স্পিকার নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। বেশ জটিলতা কাটিয়েই স্পিকার পদে বসেছেন বিজেপি সংসদ ওম বিড়লা। এবার কে হবেন ডেপুটি স্পিকার এই নিয়েই...

সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, চিনে নিন তাঁকে

নয়াদিল্লি: বর্তমান জেনারেল মনোজ পান্ডে অবসর নিয়েছেন। সেই জায়গাতেই জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী রবিবার সেনাবাহিনীর ৩০ তম প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন। জেনারেল দ্বিবেদী, যার...

মা’কে স্মরণ, লোকসভার পর প্রথম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের জন্য বন্ধ ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি মাসের শেষের রেডিও অনুষ্ঠান "মন কি বাত"। তিন মাসের বিরতির পর তৃতীয়বার ক্ষতায়...