পলাশ নস্কর, কলকাতা: টার্গেট একাধিক রাজ্যের উচ্চবিত্তদের৷ পুলিশের ভয় দেখিয়ে ফোন করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ৷ থানায় অভিযোগ জমা পড়ে৷ তদন্তে নামে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ৷ গ্রেফতার করে এক ব্যক্তিকে৷ অভিযুক্তের নাম অরিন্দম মণ্ডল৷ নিউটাউনের বাসিন্দা৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেক সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রাজেন্দ্র কুমার বেয়েতি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন৷ তাঁর অভিযোগ, কিছুদিন আগে তিনি একটি ফোন কল পান৷ ওই ফোনে তাঁকে এক ব্যক্তি মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার পরিচয় দেন৷ ফোনের ওপার থেকে ওই ব্যক্তি রাজেন্দ্র বাবুকে জানান, তাঁর একটি কুরিয়ার কোম্পানির পার্সেল মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চ আটক করেছে৷ সেই পার্সেলটি নেওয়ার জন্য তাঁকে কিছু ট্রানজেকশন করতে হবে।
তিনি আরও জানান, ফোনের ওপার থেকে ওই ব্যক্তির কথা শুনে রাজেন্দ্র বাবু দু’বারে ১৫ লক্ষ টাকা ট্রানজেকশন করেন। এরপরই তিনি বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন৷ দ্বারস্থ হয় পুলিশের৷ বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করে বিধান নগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একটি আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্র বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চবিত্তদের টার্গেট করছে। যে সকল মানুষরা পুলিশে ভীত হন তাঁদের ভয় দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। এই চক্রর মূল তিন পাণ্ডাকে ইন্দোর পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এরপরই অভিযোগকারী ব্যক্তির টাকা কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে সেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে কলকাতার নিউটাউনের বাসিন্দা এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে সেই টাকা গিয়েছে৷
এরপরেই তদন্ত শুরু করে নিউটাউন এলাকার বাসিন্দা অরিন্দম মণ্ডলকে আনন্দপল্লী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। এই প্রতারণা চক্র মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট থেকে তাদের কন্ট্রোল করে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে এই প্রতারণা চক্র তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে৷
শনিবার অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ তাদের নিজেদের আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই চক্রের যে মূল অভিযুক্তদের ইন্দোর পুলিশ স্টেশনের তরফ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বিধান নগর সাইবার ক্রাইম সূত্রে খবর। কিভাবে এই প্রতারণা চক্র পরিচালনা করা হত এবং এই চক্রের সঙ্গে কারা কারা জড়িত আছে সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।