বিনোদন ডেস্ক : অভিনয়ের জগতে টিকে থাকাটাই আসল যুদ্ধ। তবে এই টিকে থাকার লড়াইয়ের পথ অনেকাংশেই কঠিন ছিল অভিনেতা সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য। প্রসেনজিৎ থেকে ঋতুপর্ণা সকলেই টলিপাড়ায় রাজত্ব চালিয়েছেন, কোনোদিন হাল ছেড়ে দেননি এমনটাই জানান সুজয়। উচ্চতার শিখরে উঠতে গেলে বাধা আসবেই, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ও শিকার হয়েছেন রাজনীতির। তবে তাতেও অনড় থেকে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জেদ ছাড়েননি। টলি রাজনীতির শিকার হয়ে আত্মহত্যার কথাও ভেবেছেন, কিন্তু তারপর এই সমস্ত সমালোচনাকে এড়িয়ে নিজেকে একটা ব্র্যান্ডে পরিণত করেছেন তিনি।
‘ব্র্যান্ড’ সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়কে তৈরি করে দেননি কেউ। ‘বেলাশেষে’ খ্যাত এই অভিনেতার জনপ্রিয়তা অন্য কেউ নয় বরং তিনি নিজেই তৈরি করেছেন। এরকমই মন্তব্য করে তিনি জানান, দীর্ঘ বারো বছর তাঁকে ইন্ডাস্ট্রি ব্লকলিস্টেড করে দেন। কিন্তু তাতেও তিনি হার মানেননি। ‘দ্য ভ্যাজাইনা মোনোলগস’ থেকে পাঠ করতে গিয়েও বারবার আক্রমণের শিকার হন তিনি। তাঁর কথায়, এক বিশিষ্ট সাহিত্যিক তাঁকে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেন তিনি মেয়ে না হয়েও কি করে ‘দ্য ভ্যাজাইনা মোনোলগস’ পাঠ করছেন? সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহও তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
তাঁর কথায়, মঞ্চে উপস্থাপনার সময় কটাক্ষ করে বুদ্ধদেব বাবু বলেন, ‘তুমি ওখান থেকে নেমে যাও, কি মেয়েদের মত কবিতা পড়ছো?’ মঞ্চের মধ্যেই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু ই সমস্ত কটাক্ষ অপমান তাঁকে থামাতে পারেনি। বরং তিনি এইসবের উর্ধে নিজেকে তৈরি করার জেদ ধরে নিয়েছিলেন। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের শিল্পদের সুযোগ দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন। যারা নতুন শিল্পী ইন্ডাস্ট্রিতে আসছেন তাঁদের কাজের সুযোগ করে দেওয়া উচিত, এমন বক্তব্যটাই স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মায়ের কাছে ফিরে যেতে হবে এই ভাবনাই তাঁকে বাঁচিয়েছিল আত্মহত্যার পথ থেকে। তারপর থেকেই উঠে দাড়ানোর লড়াই শুরু তাঁর। জীবনকে নিজের শর্তে বেঁচে নিজস্ব একটা স্থান তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের এই সংগ্রামের সফলতাই আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁর বার্তা। তিনি বলেন, আমি পেরেছি, তারাও পারবে।