নয়াদিল্লি: ২৩ বছরের পুরানো মানহানির মামলায় ৫ মাসের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হল সমাজকর্মী মেধা পাটকরকে। সেই সঙ্গে তাঁকে দিতে হবে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা । ২৩ বছর আগে ২০০১ সালে বিনয় কুমার সাক্সেনা যিনি বর্তমানে দিল্লির উপ-রাজ্যপালের পদে আছেন তিনি মামলাটি দায়ের করেন। সেই মামলায় রায় আজ দিয়েছে আদালত।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাঘব শর্ম পাটকরকে মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং বিনয় কুমার সাক্সেনার খ্যাতির ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ লাখ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত অবশ্য ফৌজদারি কার্যবিধির 389(3) ধারায় তার সাজা ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছে যেখানে অভিযুক্তকে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয়।২০০০ সালে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা গুজরাটে একটি এনজিওর প্রধান ছিলেন। সেই সময়েই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। আদালত মেধা পাটকরকে সাজা দেয় তার সামনে থাকা সাক্ষ্য-প্রমাণ বিবেচনা করে এবং মামলাটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলে। বিবেচনার শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হোক সমাজকর্মীর এই প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করে বিচারক বলেছিলেন, “তথ্যগুলি বিবেচনা করে… ক্ষতি, বয়স এবং অসুস্থতা (অভিযুক্তের) দেখে আমি অতিরিক্ত শাস্তি দিতে আগ্রহী নই।” এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান ছিল।
উল্লেখ্য, ২৪ মে, আদালত পর্যবেক্ষণ করেছিল যে মিসেস পাটকরের বক্তব্যগুলি সাক্সেনাকে “কাপুরুষ” বলে অভিহিত করেছে এবং হাওয়ালা লেনদেনে তার জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে তা কেবল মানহানিকরই নয় বরং তার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাগুলিকে উস্কে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।এছাড়াও, অভিযোগকারী গুজরাটের জনগণ এবং তাদের সম্পদকে বিদেশী স্বার্থের কাছে “বন্ধক” করার অভিযোগটি তার সততা এবং জনসেবার উপর সরাসরি আক্রমণ ছিল।
৩০ মে দণ্ডের বিষয়ে যুক্তিতর্ক শেষ হয়, এরপর ৭ জুন সাজার পরিমাণের ওপর রায় সংরক্ষিত হয়। উল্লেখ্য, দিল্লির বর্তমান উপরাজ্যপাল বিনয় সাক্সেনা ২০০০ সালে, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সিভিল লিবার্টিজ’ নামে এক সংগঠনের সভাপতি পদে ছিলেন । সেই সময়ে তিনি মেধা পাটকরের ‘নর্মদা বাঁচাও’ আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন । ওই বিজ্ঞতি প্রকাশের পরেই মেধা পাটকর যার নামে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। সেই সময়ে মেধা সমাজের জন্য নর্মদা নদীর উপর বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন শুরু করেছিলেন । ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মানহানি করা হয়েছে বলেই ২০০১ সালে মামলায় দায়ের করেন সক্সেনা । যে মামলা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০০৩ সালে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।