খাস খবর ডেস্ক: হিন্দু ধর্মের অনুসারী মানুষদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন বাংলার দুই অভিনেত্রী। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। রাজ্য রাজনীতির আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন দুই বাঙালি অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ এবং দেবলীনা দত্ত। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বাংলার শিল্পীদের অসৎ এবং লোভী বলে কটাক্ষ করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
আরও পড়ুন- বাংলার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করছে তৃণমূল: কৈলাস
বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন নিজের দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ধর্মীয় কারণেই কলকাতায় থাকা হয়নি তাঁর। মেলেনি ভারতের নাগরিকত্ব। এই মুহূর্তে দিল্লিতে থাকলেও তসলিমা নাসরিন সুইডেনের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের শিল্প এবং সাহিত্যের সঙ্গে বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে লজ্জার লেখিকার।
নিজের দেখা অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করেই রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার বিষয়ে গঙ্গাপারের শিল্পীদের আক্রমণ করেছেন তসলিমা। যা নিয়ে মঙ্গলবার একটি সুবিশাল পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে। তিনি লিখেছেন, “আশি-নব্বইয়ের দশকে পশ্চিমবঙ্গে দেখতাম শিল্পী সাহিত্যিক পেশাজীবী ব্যবসায়ী সকলে বামপন্থী। সরকারী মন্ত্রী আমলা সকলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। বামপন্থা ছাড়া আর কোনও পন্থায় তারা বিশ্বাস করে না। অবাক কাণ্ড, যখনই বামফ্রন্ট সরকারের পতন হতে শুরু হলো, অধিকাংশ লোক ধীরে ধীরে নতুন দলের সঙ্গে ভিড়ে গেল। নতুন দল ক্ষমতায় এলে ঠিক বাম ফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে যেমন অঙ্গাঙ্গী মিশে ছিল, তেমন মিশে গেল। অনেকটা এক কোষী অ্যামিবার মতো, যে কোনও আকার ধারণ করতে পারে। মনেই হয়নি তারা কোনও বহুকোষী প্রাণী।”
বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করে বাংলার শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তসলিমা লিখেছেন, “এখন আবার নতুন আরেকটি দলের ঝাণ্ডা উড়ছে। এটিকে বেশ শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছে। এটির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আঁচ করে অনেকেই দ্বিতীয় দল ছেড়ে তৃতীয় দলটিতে ভিড়ছে অথবা ভেড়ার স্বপ্ন দেখছে। এরা প্রথম দলের ঘি’টা খেয়েছে। দ্বিতীয় দলের ছানাটা খেয়েছে। তৃতীয় দলের মাখনটার ওপরও লোভ করছে। এরা আসলে কোনও রাজনৈতিক দলের আদর্শে বিশ্বাস করে না। এরা বিশ্বাস করে ঘি ছানা মাখনে। বিশ্বাস করে নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ায়।”
ফের রাজ্যে বামেরা ক্ষমতা দখলে করলে শিল্পীরা আবার লাল ঝান্ডার দিকে ঝুঁকে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তসলিমা। শিল্পীদের এই রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া দেখে ক্ষুব্ধ তসলিমা শেষে লিখেছেন, “এদের প্রতি যে শ্রদ্ধা ছিল, হেমন্তের ঝরা পাতার মতো কবেই ঝড়ে গিয়েছে। নিঃস্বার্থ মানুষদেরই আমি শিল্পী বলে মনে করি। অসততা, অহৃদ্যতা, লোভ, লালসা শিল্পকে মেরে ফেলে না, তবে শিল্পকে মেকি করে ফেলে।”