নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: অবিভক্ত মেদিনীপুরের সকল আসনে পদ্ম ফোটানোর সংকল্প নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের ৩৫ আসনেই বিজেপি প্রার্থীদের জেতাবেন। যার পালটা পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি দাবি করেছেন যে কোটি কোটি শুভেন্দু-দিলীপ বাংলায় বিজেপিকে জেতাতে পারবে না।
গণহত্যা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানার বোস্টম মোড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, তৃণমূল নেতা বক্তার মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরাসিংহ হাজরা, বিধায়ক আশীষ চক্রবর্তী, শ্রীকান্ত মাহাতো, দিনেন রায়, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সেবাব্রত ঘোষ সহ আরও অনেকে।
সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি কড়া ভাষায় শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী কাপুরুষ। এক কোটি শুভেন্দু অধিকারী ও দুই কোটি দিলীপ ঘোষ আসলেও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না বাংলায়।”
সেই সঙ্গে অজিত মাইতি আরও বলেন, “বাংলায় ক্ষমতায় আসবেন যিনি জনগণের পাশে থাকেন, জনগণের কাজ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের পাশে রয়েছেন। আপনারা মমতার পাশে থাকুন। উন্নয়নের কথা আপনাদের ভাবতে হবে না। উন্নয়নের ডালি তিনি আপনাদের বাড়িতে পৌঁছে দেবেন।
সোমবার গড়বেতার বোস্টম মোড় থেকে মিছিল করে ছোট আঙারিয়া গ্রামে গিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৪ জানুয়ারি গড়বেতা থানার ছোট আঙারিয়া গ্রামে নৃশংসভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ জন কর্মীকে বক্তার মণ্ডল এর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে খুন করেছিল সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী। ওই গণহত্যার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী বক্তার মণ্ডল প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।
রাজ্যে ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর তৃণমূল কংগ্রেস ছোট আঙারিয়া গ্রামে গিয়ে প্রতিবছর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ছোট আঙারিয়া দিবস পালন করে। এবছরও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ছোট আঙারিয়া গণহত্যা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে প্রতিবছরের মতো এবছর ছোট আঙারিয়া গ্রামে সভা করা হয়নি। কারণ, সভায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ শামিল হয়েছিলেন। তাই সোমবার গড়বেতার বোষ্টম মোড় এ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সভা থেকে তৃণমূলের নেতারা জানালেন, “ছোট আঙারিয়া গ্রামে যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের পরিবারের পাশে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।”