বিশ্বজিৎ মণ্ডল, মালদহ: শনিবার স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী৷ বাড়ি ফিরেই অসুস্থ পড়ে ওই ছাত্রী৷ রাতে অসুস্থা বাড়ে৷ শুরু করে কান্নাকাটি৷ তখন পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞেস করলেই তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক অত্যাচারের কথা স্বীকার করে৷ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মশালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতে৷
পরিবারের অভিযোগ, শনিবার পুকুরে স্নান করতে যাওয়ার সময় স্থানীয় এক যুবক ওই ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায়৷ এরপর গ্রামের পাটখেতে তাকে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষণ করে৷ ঘটনা পাঁচদিন পরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ৷ এমনটাই অভিযোগ পরিবার সহ গ্রামবাসীদের৷
ঘটনার পাঁচ দিন হয়ে যাওয়ার পরও অধরা অভিযুক্ত৷ পুলিশ অভিযুক্তকে ধরছে না কারণ ওই যুবক তৃণমূলের কর্মী তাই৷ এমনটাই অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবার সহ গ্রামবাসীদের৷ তাই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। সরব হয়েছেন শিক্ষকরাও।এ মনকি অভিযুক্তের কঠোর শান্তির দাবি তুলেছেন কংগ্রেস ও সিপিএমও।
ঘটনা প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস জানিয়েছেন, অভিযুক্তের নামে মামলা রুজু হয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। নির্যাতিতার দাদা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমার বোন স্কুল থেকে ফিরে দুপুরে বাড়ির পাশে কানখোল নদীতে স্নান করতে গিয়েছিল৷ সঙ্গে ছিল আমার ছেলে ও পাড়ার কয়েকজন শিশু। সেই সময় প্রতিবেশী অভিযুক্ত যুবক আমার বোনকে ফুঁসলিয়ে পাশের খেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। বোন বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়ে। তখন আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। রাতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যন্ত্রণায় কান্নাকাটি শুরু করে আমার বোন। কয়েকবার জিজ্ঞেস করার পর সব কথা জানায় আমাদের। রাতেই তাকে মশালদহ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে চিকিৎসকরা চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করে দেন। পাঁচদিন ধরে সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বোন।’’
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, অভিযোগ করার পাঁচদিন কেটে গেলেও পুলিস তদন্তে ঢিলেমি করছে। তাই পাঁচদিন পরও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তাকে দ্রুত গ্রেফতার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দেয়।
অভিযুক্ত যুবকের স্ত্রী বলেন, ‘‘আমার স্বামী কী করেছে জানা নেই। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে শুনেছি। স্বামী বাড়িতে নেই। ঘটনা সত্যি না মিথ্যা বলতে পারব না। পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। স্বামীকে তাদের হাতে তুলে দিতে বলে গিয়েছে।’’
ছাত্রীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দার অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কর্মী বলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। তবে এবারের ঘটনা সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই এবার আন্দোলনে নামতে হবে৷