ইমারতী ব্যবসায়ীর গোডাউন থেকে বোমা উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য পাঁশকুড়ায়

0
45

নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর: ইমারতি দোকানের গোডাউনে থেকে টাইম বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে চঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় মুল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে ওই ঘটনার তদন্তে নেমে রোমাঞ্চকর তথ্য উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপারের অফিসের সাংবাদিক সম্মেলন করে রোমাঞ্চকর তথ্য প্রকাশ করলেন জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব। রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ মুল অভিযুক্ত আসানুর আলিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে যে ধৃত যুবকের বাড়ি পাঁশকুড়া থানার রামগড় গ্রামে। শনিবার অভিযুক্তকে তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে পুলিশ হেফাজতে নির্দেশ দেন। ধৃত আসানুর হায়দ্রাবাদের মার্বেল মিস্ত্রি ছিলেন। গত কয়েক দিন আগে ভিন্ন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছিল ওই যুবক।

- Advertisement -

এদিন সকালে জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব সাংবাদিক সম্মেলন রোমাঞ্চকর তথ্য প্রকাশ করলেন। তিনি জানান, পাঁশকুড়ার শেরহাটি গ্রামের কার্ওিক গাঁতাইতের একটি ইমারতি ব্যাবসা রয়েছে। দোকানের পাশাপাশি একটি গোডাউন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই গোডাউনে একটি বিস্ফোরক রেখে চলে যান আসানুর। সকালে ওই ব্যাবসায়ীকে হিন্দি ভাষার চারবার ফোন করে জানান গোডাউন কি রয়েছে। পাশাপাশি দুই বার মোবাইলে মেসেজ পাঠায়। ব্যাবসায়ী গিয়ে দেখেন টাইম বোমা।

ঘটনার খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে গোটা এলাকায় ঘিরে ফেলে। খবর দেওয়া হয় বোম স্কোয়াড ও সিআইডি। বৃহস্পতিবার বিকালে বোম স্কোয়াডের একটি টিম ঘটনার স্থলে ছুটে আসে।বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, আসানুর ওই ইমারতি দোকানের মালিকের কাছ বাড়ি তৈরির জন্য অনেক টাকায় মালপত্র ধার নিয়েছিল। টাকা শোধ দেওয়া নিয়ে মালিক বারবার চাপ দিচ্ছিল। মালিককে ভয় দেখানোর জন্য ইউটিউব দেখে বিস্ফোরক বানিয়ে ফেলে আসানুর। পাশাপাশি একটি নতুন মোবাইল কেনে, একটি মোবাইলে সিম কেনেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ইমারতি গোডাউনে বিস্ফোরক রেখে দিয়ে যায় আসানুর। তারপরে চারবার মালিককে ফোন করে হুমকি ও মেসেজ করে বিষয়টি জানায়। এদিন সন্ধ্যায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বীকার করেছে পুরো ঘটনাটি। ভয় দেখানোর জন্য এমন করেছিলেন।অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হবে।

প্রসঙ্গত বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া শেরহাটি গ্রামের বোমা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। খবর দেওয়া হয় পাঁশকুড়া থানার পুলিশকে। গোটা এলাকায় পুলিশ এসে ঘিরে ফেলে। পাশাপাশি বাজারে সমন্ত দোকান বন্ধ করে দেয়। গ্রামের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনার স্থলে ছুটে আসে বোম স্কোয়াডের একটি টিম। রাতেই ফাঁকা এলাকা নিষ্ক্রিয় করেন।

বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া থানার পুলিশের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোডাউনের মালিক ও তার ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কাছ বেশ কয়েকজনের সন্দেহ ভাজন নাম জিজ্ঞাসা করেন পুলিশ। সন্দেহ ভাজনের মধ্যে আসানুর আলি ছিল। দোকানের এক কর্মচারী আসানুরকে গোডাউন থেকে কালো ব্যাগ চেন লাগাতে বেরিয়ে যেতেন দেখো। এরপর আসানুরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনাটি সামনে আসে। ধৃতআসানুর কাছ থেকে কিছু বিস্ফোরক ও মোবাইল, সিম সিজ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।